মাউন্ট রোরাইমা
আমাদের রহস্যময় পৃথিবীতে (প্রাকৃতিক বা অ-প্রাকৃতিক) রহস্যের সীমা নেই। সময়ে অসময়ে বিভিন্ন ভাবে এই প্রাকৃতিক রহস্যগুলো উদ্ভাবন হয়েছে। এর মধ্যে আবার কিছু স্থান বা বিষয় রয়েছে যা অতি-প্রাকৃতিক। আর এ কারনেই এগুলো যুগ যুগ ধরে মানুষের কাছে হাজারো রহস্যে তৈরি করেছে। আধুনিক বিজ্ঞানের উৎকর্ষতাও এ রহস্যের কোনো কারণ বর্ননা করতে পারেনি আজও। তাই বিজ্ঞানীরা এগুলোকে অতি-প্রাকৃতিক স্থান বলে অভিহিত করেছেন। মাউন্ট রোরাইমা সমতল শীর্ষ বিশিষ্ট পর্বতমালা যার স্থানীয় নাম টিপুই। এটি অবস্থিত ভেনিজুয়েলায়। খুবই দুর্গম আর মেঘে আবৃত-ভেজা রহস্যময় টিপুই, এমনকি শুকনো মৌসুমেও মেঘে ঢাকা থাকে। ভু-তত্ত্ববিদদের স্যান্ডস্টোনের স্তরের মাঝে মাঝে গলিত পাথরের লাভা জমে এই আকার ধারন করেছে, স্যান্ডস্টোনের বয়স নির্ধারণ করেছে ১.৮ বিলিয়ন বছর। রোরাইমাতে কিছু উদ্ভিদ আর প্রানীর উদ্ভব হয়েছে যা পৃথিবীর আর অন্য কোথাও নেই।
এই পবর্তমালা সর্ব প্রথম আলোচনায় আসে ১৫৯৬ সালে। ৩১ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থান আর চারদিক ৪০০ মিটার লম্বা ক্লিফ দ্বারা বেষ্টিত এই পর্বতমালার অবস্থান তিন দেশের সীমান্তে ভেনিজুয়েলা, ব্রাজিল আর গায়ানা। কিন্তু একমাত্র ভেনিজুয়েলা সীমান্ত দিয়েই এই দুর্গম পর্বতে প্রবেশ করা যায়। এই অপূর্ব সুন্দর পবর্তটি বছরের বেশিরভাগ সময় মেঘে ঢাকা থাকে, এ যেন সত্যিই এক স্বর্গ রাজ্য! মাউন্ট রোরাইমা পারারাইমা পর্বতশ্রেনীর উচ্চতম পাহাড়। এটা ভেনেজুয়েলার কানাইমা ন্যাশনাল পার্কের অন্তর্ভূক্ত। ইউনেস্কো এটাকে হ্যারিটেজ পার্ক হিসেবে ঘোষনা দিয়েছে। বিখ্যাত এ্যাঞ্জেল ফলস এই পার্কের অংশ হিসেবেও রয়েছে। এই রোরাইমা পাহাড়ের শিখর ৯২১৯ ফিট উঁচু। এর প্রায় ১৩১২ ফিট খাঁড়া শিখর। পর্বতারোহন করা যায়, তবে দর্শনার্থীরা সাধারনর হেলিকপ্টারে করে এর সৌন্দর্য্য উপভোগ করেন। দূরবর্তী জঙ্গলে ভরা এই মাউন্ট রোরাইমা ল্যান্ডস্কেপই, স্যার আর্থার কনান দোয়েলে কে ‘দ্য লস্ট ওয়ার্ল্ড’ (The Lost World) উপন্যাস লিখতে অনুপ্রাণিত করেছিল। এবং এর নাটকীয় জলপ্রপাত নিয়ে ২০০৯ সালে তৈরি হয়েছিলো “Paradise Falls” মুভিটি।
প্রতিক্ষণ/এডি/রাসিব